ডাটা সেন্টারডাটা সেন্টার

বিশ্বের সব ধরনের ওয়েবসাইটই কোনো না কোনো সার্ভার থেকে চলে। আর নির্ভরযোগ্য সার্ভার এর জন্য সারা বিভিন্ন দেশে অসংক্ষ্য ডাটা সেন্টার রয়েছে। কিছু ডাটা সেন্টার প্রাইভেট, আবার কিছু পাবলিক ডাটা সেন্টার। প্রাইভেট ডাটা সেন্টার একটি বিশেষ লক্ষ্য নিয়ে বিশেষ কিছু মানুষ বা প্রতিষ্ঠানের জন্য পরিচালিত হয়, অপরদিকে পাবলিক ডাটা সেন্টার থেকে সাধারনত বাহিরের যে কোউ নিজের বা ব্যাবসায়িক কাজে সার্ভার ভাড়া নিতে পারে অথবা নিজের সার্ভার সেই ডাটা সেন্টারে রেখে ব্যাবহার করতে পারে। ডাটা সেন্টারের সুবিধা হলো এখানে ইন্টারনেট কানেকশন, বৈদ্যুতিক পাওয়ার এবং দক্ষ জনবল দিয়ে সার্ভার এর দেখাশোনা করা হয়। একটি ডাটা সেন্টারের বিভিন্ন দায়িত্বের মধ্যে সার্ভারের এবং এর তথ্যের নিরাপত্তা প্রদান করাও একটি প্রধান দায়িত্ব। চলুন জেনে নেওয়া যাক ডাটা সেন্টারে কি কি উপায়ে আমাদের তথ্যের নিরাপত্তা প্রদাণ করে থাকে। এতে আপনি যেমন আপানার তথ্যের নিরাপত্তার বিষয়টি জানতে পারবেন, তেমনি পরবর্তিতে কোনো সময় নিজের ডেডিকেটেড সার্ভার নেওয়ার সময় ডাটা সেন্টারে কি কি বিষয় লক্ষ্য করতে হবে তা জানতে পারবেন।

সার্ভারের নিরাপত্তা: ডাটা সেন্টারে সার্ভার গুলো কিভাবে রাখা হয়, এবং কিভাবে এক্সেস করা হয় তার ওপর তথ্যের নিরাপত্তার বিষয়টি নির্ভর করে। ডাটা সেন্টারে বাহ্যিক কোনো লোকের অনাকাংক্ষিত প্রবেশ রুখতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদান করে থাকে। বিভিন্ন ডাটা সেন্টার ভেদে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যাবস্থা রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে আইডি কার্ড ভেরিফিকেশন থেকে শুরু করে বায়োমেট্রিক বিভিন্ন নিরাপত্তা ব্যাবস্থা নেওয়া হয় এবং অনাকাংক্ষিত ঘটনা প্রতিহত করার জন্যও ব্যাকআপ প্ল্যান করা হয়ে থাকে।

ব্যাকআপ সেবা: এখানে ব্যাকআপ বলতে আমি তথ্যের ব্যাকআপ এর কথা বলিনি। যদিও তথ্যের ব্যাকআপ রাখাটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এখানে আমি পাওয়ার ব্যাকআপ, কানেকশন ব্যাকআপ এসব এর কথা বুঝিয়েছি। একটি ভালো ডাটা সেন্টারে একাধিক সোর্স থেকে ইলেক্ট্রিক লাইন নেওয়া হয়ে থাকে যেন এক লাইন এর সমস্যা দেখা গেলে অন্য লাইনে কাজ চালানো যায়। এছাড়া জেনারেটর সহ বিকল্প অনেক পাওয়ার ব্যাবস্থাপনা থাকে এসব ডাটা সেন্টারে তাই হটাৎ বিদ্যুৎ চলে যাওয়াতেও কোনো সমস্যা হয়না। আবার ইন্টারনেট কানেকশন যেহেতু সার্ভারের প্রাণ, তাই এ ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি প্রোভাইডার হতে কানেকশন নিয়ে যে কোনো অনাকাংক্ষিত ডাউনটাইম অনেক কমিয়ে আনে। যদিও কোনো ডাটাসেন্টারেই ১০০% আপটাইম নিশ্চিত করা সম্ভব নয়, তবে সবাই এর কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করে।

মূল তথ্যের নিরাপত্তা: ডাটা সেন্টারের সার্ভার গুলোতে বাহিরের কারও সরাসরি এক্সেস পাওয়ার সুযোগ না থাকায় তথ্য চুরির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ডাটা সেন্টার থেকে সরাসরি তথ্য চুরির চেয়ে অনলাইনে তথ্য চুরির সম্ভাবনা অনেক অনেক বেশি। ডাটা সেন্টার হয়তো আপনার তথ্য চুরি করেনা, কিন্তু আপনি যেই সার্ভিস বা ওয়েবসাইটে আপনার তথ্য দিচ্ছেন (সেটিও কোনো না কোনো ডাটাসেন্টারেই রয়েছে), সেই ওয়েবসাইট কতটা নিরাপদ ও বিশ্বাসযোগ্য তা ভাবার বিষয়। এছাড়া ওয়েবসাইটে যেই সার্ভার সফটওয়ার সহ অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশন ব্যাবহার করা হয়, তার নিরাপত্তার ত্রূটি থেকেও হ্যাকিং বা অন্য কোনো ভাবে তথ্য বেহাত হয়ে যাওয়ার ভয় থেকে যায়। তবে তথ্যের নিরাপত্তার জন্য ডাটাসেন্টারের দিক থেকে কোনো ভয়ের কারন নেই। আপনাকে শুধু ব্যাবহারকারি হিসেবে খেয়াল রাখতে হবে যে, যেই ওয়েবসাইটে আপনি আপনার তথ্য দিচ্ছেন, সে ভবিশ্যতে আপনার তথ্যের অপ-ব্যাবহার করবে কি-না।

ডাটা সেন্টার গুলো নিজেদের ভাবমুর্তি বজায় রাখতে কখনোই সার্ভারে থাকা তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করে না এবং সবসময় চেষ্টা করে থাকে অন্য কেউ ও যেন কোনো ক্ষতি করতে না পারে। বিশ্বের অনেক উন্নত এবং উন্নয়নশিল দেশেও অসংক্ষ্য ডাটাসেন্টার থাকলেও আমাদের দেশে এর পরিমান প্রায় নেই বললেই চলে। অদুর ভবিশ্যতে আমাদের দেশে অনেক বেশি ডাটা সেন্টার দেখার প্রতিক্ষায় আজকের মতো বিদায়, ভালো থাকবেন।

By রাইসুল মুশফেক

টেক লাইফ নিয়ে সাজানো এই ব্লগে আপনাকে স্বাগতম। উপস্থাপিত বিষয়সমুহে আপনাদের কিছুটা সাহায্য করতে পারলেও আমি আনন্দিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *